মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও এক নারী নিহত হয়েছেন। কোদাল ও কাঁচির আঘাতে তাদের হত্যা করে ঘাতক সাইদুল ইসলাম (৪০)। এ ঘটনায় অন্তত চারজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় জনতার সহায়তায় ঘাতককে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভালুকা উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের পাঁচগাঁও গ্রামে। নিহতরা হলেন— মৃত সলিম উদ্দিন ফকিরের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আশরাফ উদ্দিন (৭০) এবং সাইদুলের নিজের বড় ভাই শহীদ উদ্দিনের স্ত্রী হাফেজা বেগম (৪৫)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে নিজ বাড়ির উঠানে বসে ধান মাপার কাজ করছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন। এ সময় মানসিক ভারসাম্যহীন ও মাদকাসক্ত বলে পরিচিত একই গ্রামের আফতাব উদ্দিনের ছেলে সাইদুল ইসলাম পেছন থেকে এসে কোদাল দিয়ে মাথায় এলোপাতাড়ি কোপান। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর সাইদুল বাড়িতে ঢুকে নিজের বড় ভাইয়ের স্ত্রী হাফেজা বেগমকে ধান কাটার কাঁচি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এ সময় সাইদুল মিয়ার আক্রমণে একই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সোলাইমান সিকদার (৭৫) আবদুস সামাদ (৩৫), সাকিম মিয়া (৩৫), ও সাইদুলের মামি জেবুন নাহার (৫০) আহত হন।
তাঁদের ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘাতক সাইদুল ইসলাম পেশায় একজন দিনমজুর। ছোটবেলায় মানসিক ভারসাম্যহীন থাকলেও পরবর্তীতে কিছুটা সুস্থ হন। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন এবং মাঝে মাঝে উন্মত্ত আচরণ করতেন। গত কয়েকদিন ধরে পাগলামির মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তাকে পরিবারের লোকজন ঘরের মধ্যে আটকে রেখেছিল। তবে ঘটনার দিন বিকেলে তিনি জানালা ভেঙে বাইরে বের হয়ে এই ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চালান।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির জানান, "এই ঘটনায় সাইদুলকে আটক করা হয়েছে এবং মরদেহ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ঘটনার কারণ উদঘাটন করতে পুলিশ তদন্ত করেছে।”
এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে পুরো এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিহতদের পরিবার ও এলাকাবাসী ঘাতকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
মতামত দিন